নিজস্ব প্রতিবেদক;
আফগানিস্তানের বেশিরভাগ প্রদেশে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান শিক্ষাবঞ্চিত মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ দেবে কিনা তা দেখতে অপেক্ষা করছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। আফগানিস্তানে সংস্থাটির প্রতিনিধি সালাম আল-জানাবি এ কথা জানিয়েছেন।
রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিককে ইউনিসেফের এই প্রতিনিধি বলেন, ‘মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তালেবানের বিতর্কিত এই সিদ্ধান্ত বাস্তবতার সঙ্গে মিলবে কিনা তা দেখতেই অপেক্ষা করছে ইউনিসেফ। উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি বাদে অধিকাংশ প্রদেশে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারীদের জন্য স্কুল, কমিউনিটিভিত্তিক ক্লাস এবং বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ। এটি গুরুত্বপূর্ণ যে পুরুষ ও নারী উভয় শিক্ষকগণই প্রশিক্ষিত। তারা মাসিক বেতন গ্রহণ করেন এবং তারা শিক্ষা দেওয়ার পক্ষে রয়েছেন।’
আফগানিস্তানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক লেভেলের ৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন শিশুর মধ্যে ৩৮ শতাংশ মেয়ে বলে উল্লেখ করেন আল-জানাবি। তিনি বলেন, ‘বিপরীতে ২০০১ সালে মাত্র ১ মিলিয়ন শিশু শিক্ষার আওতায় ছিল এবং তার ১০ শতাংশ ছিল মেয়ে। গত দুই দশকে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে যে লাভ হয়েছে তা আমরা হারাতে পারি না। আমরা কেবল সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত মেয়েদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে অগ্রগতি রক্ষা করতে পারি।’
ইউনিসেফ প্রতিনিধির বরাতে স্পুটনিক জানিয়েছে, তালেবানের সঙ্গে ইউনিসেফের একটি কার্যকরী সম্পর্ক রয়েছে এবং তা বর্তমান এই সংকটের অনেক আগে থেকেই ছিল।
আল-জানাবি বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনো জায়গায় শিশুদের প্রয়োজনের ব্যাপারে ইউনিসেফ সরকার ও সরকারবিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করে থাকে। এটি সবথেকে ভালো কাজ। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা ইউনিসেফ এবং অন্যান্য মানবতাবাদীদের দ্রুত, নিরবচ্ছিন্ন এবং নিরাপদ মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় নিশ্চয়তা ও সুরক্ষা প্রদান করে। এর মাধ্যমে প্রয়োজন অনুসারে ইউনিসেফ কাঙ্ক্ষিত জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে পারে।’
আল-জানাবির বরাতে স্পুটনিক জানিয়েছে, শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে তালেবান নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় মেয়েসহ সব শিশুর জন্য ডিসেম্বরে একটি কর্মপরিকল্পনা গঠন করা হয়।
সালাম আল-জানাবি বলেন, ‘আমরা আশা করি ওই কর্মপরিকল্পনা অনুসারে কাজ করব। স্থানীয় পর্যায়ে তালেবান গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি যাতে সব পর্যায়ে শিশুদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবা নিশ্চিত করা যায়।’ ২০ বছর আফগানিস্তানের মাটিতে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতির পর গত আগস্টের মাঝামাঝিতে দেশটির ক্ষমতা দখল করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান।
সূত্র : এএনআই