পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
সামনেই রয়েছে উপজেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিট পূর্বধলা সরকারি কলেজ ।সেই সাথেই রয়েছে শতবর্ষী পূর্বধলা জে.এম.সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।কলেজে’র ভিতরে সবুজ গাছের নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য বর্ধনে সহসাই শোভা পাচ্ছে সুশীতল ছায়া যা সব সময় উপভোগ্য।আর একটু ভিতরে প্রবেশ করা মাত্রই চোখে পড়বে নান্দনিক ও ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় রাজধলা বিল।নানা অযতেœ অবহেলায় গড়ে উঠেনি প্রকৃত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে।চারদিকে ঘরবাড়ি বেস্টিত রাজধলা বিল অন্য যে কোন বিলের চেয়ে বিন্নতা রয়েছে।অনেকে আবার দাবী করে জমির কিছু কিছু বে-দখল হয়ে যাচ্ছে।ইতিহাস ছিল এই বিলে বড় বড় মাছ পাওয়া যেত আর এখনো এর মাছ খুবই সুস্বাদু। ভিন্নতা হলো বড় বড় চাপিলা মাছ আহ কি অসাধারন গন্ধ ও স্বাদে অতুলনীয়।অতিথি পাখির কলরবে সারা বিলময় মুখরিত থাকতো এখন তা না থাকলেও একেবারে হারিয়ে যায়নি।বিলের মাছ এখন জেলেরা আর বড় হতে দেয় না।বন জঙ্গল উজার হওয়ার কারনে বড় বড় কাছিম ও কাকঁড়া নেই বললেই চলে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আঁধার নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার ১৩০ একর আয়তন বিশিষ্ট বৃহদাকৃতির নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যে ঘেরা ঐতিহ্যবাহী রাজধলা বিল। ভ্রমণপ্রেমীদের জন্যে এক আকর্ষণীয় স্থান। রাজধলা বিল শুধু নামেই একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান নয় আবহমান কাল থেকে এর সাথে জড়িত রয়েছে অনেক মজাদার গল্প ও কাহীনি।স্বচ্ছপানি ও মনোরম পরিবেশের কারণে প্রতিদিন এখানে ছুটে আসে ভ্রমণপিপাসু মানুষ। প্রতিদিনি অবসর সময় কাটাতে ও আনন্দ বিনোদন উপভোগ করতে স্থানীয় অধিবাসীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থীদের পদ চারণায় মুখরিত হয়ে উঠে রাজধলা বিল।
বয়স্ক লোক মুখে শোনা যায়, প্রকৃতির মনোরম পরিবেশের কারণে জমিদারদের একাংশ স্থানান্তরিত হয়ে ধলা বিলের পুর্ব ও দক্ষিণ দিকে বসতি স্থাপন করে। জমিদারদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিলের পানি প্রজা সাধারণের ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল।জানা যায়, ধলা শব্দের সঙ্গে সুসং জমিদার পরিবারের বৈবাহিক সূত্রে প্রাপ্ত রাজা উপাধিটা সংযুক্ত হয়ে বিলের নামাকরণ হয় রাজধলা।
জেলা পরিষদের অর্থায়নে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে বিল রক্ষা ও উন্নয়নে কাজ হয়েছে। বিলের নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য বর্ধনে ও মানুষের চলাচল উপযোগী রাস্তা, ঘাট ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। যা সৌন্দর্য পিপাসু মানুষদের কাছে আকর্ষিত । আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি )স্থানীয় এলাকাবাসি নিরজ্ঞন কুমার ভাদুরি বলেন, বিলের চারদিকে সড়ক দিয়ে বেষ্টিত করে পাকা করণ করে এবং লিজ দেয়া জমি নিয়ে সংস্কার করে আয়ের আওতায় আনা যেতে পারে।
আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়ঐতিহাসিক রাজধলা বিলে দিন দিন দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়ছে।পাশাপাশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের অভিযোগ ও রয়েছে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রাস্তর মাটি সরে রাস্তাগুলো ভেঙ্গে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও আবাসন ব্যবস্থা তেমন নেই। রাজধলা বিলের পাড় ঘেঁষে চারপাশ পাশে ব্লক বসিয়ে পাকা নান্দনিক সড়ক নির্মাণ করলে উপভোগ্য ও মনোরম হবে। ইতিমধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগী কমিশনার মো. কামরুল হাসান এন ডি সি,নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান দর্শন ও পরিদর্শন করে গেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন বলেন,নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলার জন্য আমরা অর্থ সংগ্রহ সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আলোচনা বিভিন্ন মহলে করে যাচ্ছি।এবং ভবিষ্যতে আয়ের উৎস হিসেবে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে কুলসুম বলেন, বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে অবশিষ্ট রাস্তাাগুলো নির্মাণ ও মেরামত করা হবে। রাজধলা বিলকে পর্যটনের আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাবিত পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে।