সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা ঘটনায় সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের ১০ বছর ও সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ তিন জনের ৯ বছর সাজা প্রদান করেছে আদালত। এছাড়াও বাকী আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে সাতক্ষীরার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হুমায়ুন কবির এ মামলার মোট ৫০ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে এ সাজা প্রদান করেন। এর আগে সকালে এ মামলায় জেলহাজতে থাকা সাবেক সাংসদ হাবিবসহ ৩৪ জন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে তাদের সামনে এ রায় ঘোষণা করা হয়। বাকী ১৬ আসামী পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরার পিপি এ্যাড. আব্দুল লতিফ।
অপরদিকে আসামীপক্ষে ছিলেন এ্যাড. শাহানারা আক্তার বকুল, এ্যাড. আব্দুল মজিদ, এ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু ও এ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
কারাগারে থাকা আসামীরা হলেন, সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আশরাফ হোসেন, সাবেক পৌর মেয়র আক্তারুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, শেখ তামিম আজাদ মেরিন, আব্দুর রকিব মোল্ল্যা, আব্দুল মজিদ, হাসান আলী, ময়না, আব্দুস সাত্তার, তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু, জহুরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সামাদ, আলতাফ হোসেন, শাহাবুদ্দিন, সাহেব আলী, সিরাজুল ইসলাম, রকিব, ট্রলি শহীদুল, মনিরুল ইসলাম, শেখ কামরুল ইসলাম, ইয়াছিন আলী, শেলী, শাহিনুর রহমান, দিদার মোড়ল, সোহাগ হোসেন, মাহাফুজুর মোল্লা, আব্দুল গফফার গাজী, রিঙ্কু, অ্যাড. আব্দুস সামাদ, টাইগার খোকন ওরফে বেড়ে খোকন।
পলাতক আসামীরা হলেন, সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল কাদের বাচ্চু, মফিজুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, খালেদ মঞ্জুর রোমেল, আরিফুর রহমান, রিপন, ইয়াছিন আলী, রবিউল ইসলাম, মাজাহারুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, আব্দুর রব, সঞ্জু , নাজমুল হোসেন, জাবিদ রায়হান লাকী, কণক, মাহাফুজুর রহমানসহ ১৬ জন।
উল্লেখ্য ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে হাসপাতালে দেখে মাগুরা ফিরে যাবার পথে কলারোয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলা শিকার হন। এতে শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও তার সফরসঙ্গী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, শহিদুল হক জীবন, আবদুল মতিনসহ অনেকেই আহত হন। এ সময় বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ মোসলেমউদ্দিন ২৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। এ মামলা থানায় রেকর্ড না হওয়ায় তিনি নালিশী আদালত সাতক্ষীরায় মামলাটি করেন। পরবর্তীতে এ মামলা খারিজ হয়ে গেলে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর ফের মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেন। গত ২৭ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষে কাঠগড়ায় থাকা সাবেক সাংসদ হাবিবসহ ৩৪ জনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকী ১৬ আসামী পলাতক রয়েছেন।